পাকিস্তানে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ১০ এজেন্ট গ্রেপ্তার
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
২৬-০৬-২০২৫ ০৩:৪৫:৪৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৬-০৬-২০২৫ ০৩:৪৯:৫১ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র)-এর হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা অন্তত ১০ জন এজেন্টকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাকিস্তানে। দেশটির পাঞ্জাব ও করাচি প্রদেশ থেকে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদেরকে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সামা টিভির এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর এজেন্টদেরকে ধরতে ‘অপারেশন ইয়ালঘর’ নামে সুপরিকল্পিত একটি অভিযান পরিচালনা করেছে পাকিস্তান পুলিশের পাঞ্জাব কাউন্টার-টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি)। এ অভিযানে ছয়জন পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা ‘র’-এর হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল ‘র’-এর এই এজেন্টদের। এ ব্যাপারে পাকিস্তান পুলিশের অতিরিক্ত আইজি শাহজাদা সুলতান বলেন, দক্ষিণ পাঞ্জাবের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, বিশেষ করে বাহাওয়ালপুর এবং বাহাওয়ালনগরকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে একটি সন্ত্রাসী পরিকল্পনা সফলভাবে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত অনুসারে, বাহাওয়ালপুরের মসজিদ এবং রেলস্টেশনে ভয়ংকর হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল ‘র’-এর এই এজেন্টরা। অভিযানের সময় দুই ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তার অডিও রেকর্ডিংও উদ্ধার করা হয়েছে। সিটিডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি), সেফটি ফিউজ এবং গোপনীয় মানচিত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হামলার নির্দেশ পাওয়ার কথা স্বীকারও করেছে।তদন্তে চিহ্নিত ভারতীয় কর্মকর্তারা হলেন মেজর রবীন্দ্র এবং ইন্সপেক্টর সিং; উভয়ই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। অতিরিক্ত আইজি শাহজাদা সুলতানের দাবি অনুসারে, মেজর রবীন্দ্র ব্যক্তিগতভাবে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে ‘র’-এর সহায়তাকারীদের কাছে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) সরবরাহ করেছিলেন। এই আইইডি দিয়ে একটি মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল।
পরিকল্পিত এই হামলার জন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি চ্যানেল এবং শাখাবিহীন ব্যাংকিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অর্থ এসেছিল সন্ত্রাসীদের কাছে, যা অর্থ লেনদেনের একটি অত্যাধুনিক নেটওয়ার্কের দিকেই ইঙ্গিত করছে। অতিরিক্ত আইজি (অপারেশনস) আরও নিশ্চিত করেছেন যে ধ্বংসাত্মক উদ্দেশ্যে পাকিস্তানে অর্থ প্রেরণের জন্য একাধিক ডিজিটাল উপায় ব্যবহার করা হয়েছিল।সিটিডি পাঞ্জাবের কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, মিয়ানওয়ালি এবং ডেরা গাজি খানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য আফগানিস্তান থেকে অর্থায়ন করা হচ্ছে। সিটিডি কর্মকর্তা ওয়াকার আজিম খারালের মতে, ডেরা গাজি খান এবং মিয়ানওয়ালিতে হামলা চালানোর জন্য তেহরিক-ই-তালিবানের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে অর্থায়ন করছে ‘র’। এদিকে, করাচিতেও বড় এক অভিযানে চারজন ‘র’ এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা সংস্থা এবং স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন ইউনিট (এসআইইউ)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে করাচির এসএসপি মেমন বলেন, গ্রেপ্তারকৃত সন্দেহভাজনরা ভারতীয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের জন্য কাজ করতেন এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্নেল রঞ্জিতের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন বলে জানা গেছে।গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, অস্ত্র ও একটি গাড়ি উদ্ধার করেছে অভিযানিক দল। এসএসপি মেমনের দাবি, তারা সীমান্তের ওপারে তাদের হ্যান্ডলারদের কাছে সামরিক স্থাপনার সংবেদনশীল ছবি এবং জিওট্যাগ করা অবস্থান সরবরাহ করছিল। চারজনই স্থানীয় সুজাওয়াল জেলার বাসিন্দা এবং ২০ বারেরও বেশি ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। তাদের নেটওয়ার্ক এবং আরও সহযোগীদের খুঁজে বের করার জন্য গভীর তদন্ত চলছে। অবশ্য, পাঞ্জাবে গ্রেপ্তার ৬ জন ও করাচিতে গ্রেপ্তার ৪ জনের মধ্যে কোনও যোগসূত্র এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, তারা সবাই পাকিস্তানি নাগরিক।
বাংলাস্কুপ/ ডেস্ক/এনআইএন
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স